বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত বুধবার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল সরকার কর্তৃক। জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ২৩%, এ জন্য ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে গত শুক্রবার হঠাৎই কোন ঘোষণা ছাড়া দেশের আন্তঃ জেলা বাস, নগর পরিবহনসহ সকল বাস চলাচল বন্ধ করে দেন বাস মালিকগণ। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃুদ্ধির জন্যেই আজ রবিবার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে বৈঠকের আলোচনার পরে বাস ভাড়া প্রায় ২৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সার পরিবর্তে ১ টাকা ৮০ পয়সা হবে। তাই ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ছে। আর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ মহানগরগুলোতে ২৬.৫ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ মহানগরের বড় বাসের ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সার পরিবর্তে ২ টাকা ১৫ পয়সা হচ্ছে। প্রতি কিলোমিটারে বেড়েছে ৩৮ পয়সা। স্টপিজ প্রতি সর্বনিম্ন ১০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে। মিনিবাসে সর্বনিম্ন ভাড়া হচ্ছে ৮ টাকা। বাড়তি বাড়ায় প্রতিদিন অফিস বা নির্ধারিত স্থানের যাত্রীগণ উদ্ধিগ্ন হচ্ছেন।
যাতায়াতের মাধ্যম লঞ্চ নৌযানে ও ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। লঞ্চে ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫%। সর্বনিম্ন ভাড়া হয়েছে ২৫ টাকা। কিলোমিটার প্রতি বেড়েছে ৬০ পয়সা।
কৃষকের সেচ পাম্প চালাতে গুণতে হবে বাড়তি খরচ। এর ফলে খাদ্য উৎপাদন করতে খরচ বেড়ে যাবে। উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বেড়ে গেলে এর সম্পুর্ণ চাপ ক্রেতা ভোক্তা সকলের উপরই পরবে। মাসিক আয় বৃদ্ধি না পেয়ে শুধু ব্যয় বৃদ্ধি তাই সাধারণ শ্রমজীবী, কর্মজীবী জনগণ উদ্ধিগ্ন। কিভাবে তারা হঠাৎ বাড়তি ভাড়া ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে নির্দিষ্ট আয় দিয়ে পুরো মাস চলবেন?
টানা প্রতি পাঁচ মাসে বেড়েছে এলপি গ্যাসের দাম। এক বোতল (সাড়ে বারো লিটার) এলপি গ্যাস কিনতে বর্তমানে ১,৪০০ টাকা গুণতে হয়। বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। লিটার প্রতি ১৬০ টাকা। দিন দিন সয়াবিন তেলের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই চালের দামও বৃদ্ধির আনাগোনা চলছে। মুরগি, চাল, সবজি, পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। নির্ধারিত বেতনধারী সকল মানুষের বর্তমান অবস্থা চরম উদ্ধিগ্ন। হতাশায় ভুগছেন কিভাবে মাসের সকল খরচ এ নির্ধারিত বেতনে সম্পন্ন করবেন।
শিক্ষার্থীদের দিন প্রতি খাওয়া খরচসহ সকল খরচ বৃদ্ধিতে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীগন ও চিন্তিত। দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সকলের জীবন ব্যবস্থায় স্বস্থি ফেরাতে কিছু জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।