পাসপোর্ট কী?
বাংলাদেশী পাসপোর্ট বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বিদেশ ভ্রমণের একটি অফিসিয়াল দলিল জন্ম বা অভিবাসন সূত্রে বাংলাদেশ সরকার নাগরিকদের দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস বা বিদেশের দূতাবাস হতে দেশী পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ঈসরাইল ব্যতিত অন্য সকল দেশে বৈধভাবে ভ্রমণ বা কর্ম প্রয়োজনে প্রবেশ করা যায়। পাসপোর্টে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতিসহ সকল তথ্যাবলী উল্রেখ থাকে।
পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে ক্লিয়ারেন্স কপি। একজন প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ই-পাসপোর্ট করতে ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড এবং ছবি জমা দিতে হবে। এছাড়া ১৮ বছর এর কম বয়সীদের জন্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট বাবা-মায়ের ছবি জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিতে হবে।
পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী ও ধাপসমূহ:
ফি জমা দেয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ, পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ, পাসপোর্ট ফরম ও এর সংযুক্তি সত্যায়িত করা, আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া, পুলিশ ভেরিফিকেশন, পাসপোর্ট সংগ্রহ,
১। জরুরী পাসপোর্ট
জরুরি পাসপোর্ট সাধারণত সাত কর্ম দিবসের মধ্যে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। যদি আপনার সকল কাগজপত্রাদি সঠিক থাকে, তাহলে আপনি দুই থেকে সাতদিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে পারেন । আবার পাসপোর্টের ধরণ ১০ বছর এবং ০৫ বছর রয়েছে। যদি আপনি ০৫ বছরে ৪৮ পাতার জরুরী পাসপোর্ট নিতে চান তাহলে ব্যাংক রশিদ ৬,৩২৫ টাকা জমা দিতে হবে (সোনালী ব্যাংক)। আর যদি ১০ বছর মেয়াদ সংবলিত পাসপোর্ট নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ৮,০৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
আর যদি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী জরুরী পাসপোর্টটি নিতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকে ১০,৩৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
২। অতি জরুরী পাসপোর্ট
অতি জরুরী পাসপোর্ট সাধারণত দুই কর্ম দিবসের মধ্যে দিয়ে থাকেন। যদি আপনার কাগজপত্রাদি সঠিক থাকে তাহলে এ মেয়াদেই আপনার পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন। যাবতীয় কার্যকলাপ নিয়মানুসারে চলতে থাকবে আপনার পাসপোর্ট পাওয়ার পর ও। অতি জরুরী পাসপোর্ট পেতে ০৫ বছরের জন্য ব্যাংক রশিদ জমা দিতে হবে ৮,৬২৫ টাকা। ১০ বছরের জন্য ১০,৩৫০ টাকা।
আর যদি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী অতি জরুরী পাসপোর্টটি নিতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকে ১৩,৮০০ টাকা জমা দিতে হবে।
৩। সাধারণ পাসপোর্ট
সাধারণ পাসপোর্ট সাধারণত ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। যদি আপনার সকল কাগজপত্রাদি সঠিক থাকে, তাহলে আপনি দুই থেকে সাতদিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে পারেন । আবার পাসপোর্টের ধরণ ১০ বছর এবং ০৫ বছর রয়েছে। যদি আপনি ০৫ বছরে ৪৮ পাতার জরুরী পাসপোর্ট নিতে চান তাহলে ব্যাংক রশিদ ৪,০২৫ টাকা জমা দিতে হবে (সোনালী ব্যাংক)। আর যদি ১০ বছর মেয়াদ সংবলিত পাসপোর্ট নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ৫,৭৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
আর যদি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী জরুরী পাসপোর্টটি নিতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকে ৮,০৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
পাসপোর্টের প্রকারভেদ:
পাসপোর্ট সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে, যথা:
হাতের লেখা পাসপোর্ট, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, ই-পাসপোর্ট।
হাতের লেখা পাসপোর্ট:
হাতের লেখা পাসপোর্ট অনেকটা পুরোনো সময়ের পাসপোর্ট। কিছু কিছু দেশে যদিও এখনো হাতের লেখা পাসপোর্টের প্রচলন রয়োছে। তবে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পাসপোর্ট অধিদপ্তর ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে হাতের লেখা পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে না। তার বদলে হাতের লেখা পাসপোর্টের বদলে এসেছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট।
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট:
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি হলো এমন একটি পাসপোর্ট যা একটি নির্দিষ্ট যন্ত্র বা মেশিন দ্বার সনাক্ত করা যায়। এই পাসপোর্টের তথ্য এমনভাবে থাকে যে মেশিন সনাক্ত করতে পারে। বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সাল থেকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া শুরু করেছেন।
ই - পাসপোর্ট কী?
ই -পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেটিক পাসপোর্ট। যাতে একটি এমব্রেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রেপ্রসেসর চিপ রয়েছে। ইলেকট্রিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপের মধ্যে রয়েছে বায়োমেটিক তথ্য যা পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ কম্পিউটার চিপ এবং এন্টেনাসহ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষণ করা হয়।
বর্তমানে ই-পাসপোর্ট যে সকল বায়োমেটিক গ্রহণ করা হয় তা হলো ছবি, ফিঙ্গার প্রিণ্ট ও আইরিশ, ইলেকট্রিক বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থা ই-বর্ডার দ্বারা পাসপোর্ট চিপের বাইরের বায়োমেটিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলনামূলক যাচাই করা হয়। পাবলিক কী অবকাঠামো এর মাধ্যমে পাসপোর্ট চিপ ইলেকট্রনিক সংরক্ষিত ডেটা যাচাই করা হয়। এটি সম্পূর্ণরুপে বাস্তবায়িত হলে জালিয়াতি করা কঠিন।
এ পর্যন্ত ১২০টি দেশে ই পাসপোর্ট প্রবর্তন করা হয়েছে।
নতুন পাসপোর্ট আবেদনের সাথে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে/ভূল সংশোধনের:
যেমন: ছবি, বাংলায় নাম, পিতার নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পিতার নাম বাংলায় ও ইংরেজীতে, মৃত হলে সনদ, লিঙ্গ, রক্তের গ্রুুপ, জন্মনিবন্ধন নম্বর, জন্মস্থান, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট, কোর্টের এফিডেভিড, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, । ভাড়াটিয়া হলে বাড়িওয়ালার NID. বিদ্যু’ বিল, বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়া কর্তৃক ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র, প্রবাসী হলে ভিসার সিল ও তারিখসহ পাসপোর্টর কপি। নিবন্ধন ফরমের ৩৪ ও ৩৫ নম্বর সনাক্তকারী হিসেবে বাবা, মা। নিবন্ধন ফরমের যাচাইকারী হিসেবে পাসওয়ার্ড স্বাক্ষর করতে হবে। সকল সনদের সফট কপি ও হার্ড কপি প্রমাণ হিসেবে জমা দিতে হবে।
পাসপোর্ট এর বিধিমালা
পাসপোর্ট এর বিধিমালা আদেশ ১৯৭৩ পাসপোর্ট এর বিধিমালা১৯৭৪ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।