পাসপোর্ট কী?
বাংলাদেশী পাসপোর্ট বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বিদেশ ভ্রমণের একটি অফিসিয়াল দলিল জন্ম বা অভিবাসন সূত্রে বাংলাদেশ সরকার নাগরিকদের দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস বা বিদেশের দূতাবাস হতে দেশী পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ঈসরাইল ব্যতিত অন্য সকল দেশে বৈধভাবে ভ্রমণ বা কর্ম প্রয়োজনে প্রবেশ করা যায়। পাসপোর্টে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতিসহ সকল তথ্যাবলী উল্রেখ থাকে।
পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে ক্লিয়ারেন্স কপি। একজন প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ই-পাসপোর্ট করতে ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড এবং ছবি জমা দিতে হবে। এছাড়া ২০ বছর এর কম বয়সীদের জন্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট বাবা-মায়ের ছবি জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিতে হবে।
ই -পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেটিক পাসপোর্ট। যাতে একটি এমব্রেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রেপ্রসেসর চিপ রয়েছে। ইলেকট্রিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপের মধ্যে রয়েছে বায়োমেটিক তথ্য যা পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ কম্পিউটার চিপ এবং এন্টেনাসহ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষণ করা হয়।
বর্তমানে ই-পাসপোর্ট যে সকল বায়োমেটিক গ্রহণ করা হয় তা হলো ছবি, ফিঙ্গার প্রিণ্ট ও আইরিশ, ইলেকট্রিক বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থা ই-বর্ডার দ্বারা পাসপোর্ট চিপের বাইরের বায়োমেটিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলনামূলক যাচাই করা হয়। পাবলিক কী অবকাঠামো এর মাধ্যমে পাসপোর্ট চিপ ইলেকট্রনিক সংরক্ষিত ডেটা যাচাই করা হয়। এটি সম্পূর্ণরুপে বাস্তবায়িত হলে জালিয়াতি করা কঠিন।
এ পর্যন্ত ১২০টি দেশে ই পাসপোর্ট প্রবর্তন করা হয়েছে।
ই পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী ও ধাপসমূহ:
ওয়েবসাইটের ঠিকানা // ই-পাসপোর্টের ঠিকানা পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ
১।ই-পাসপোর্টের আবেদন পত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে।
২। ই-পাসপো্েটর আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করা লাগবে না।
৩। ই-পাসপোর্টে ফরমে কোন ছবি সংযোজন ্বং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।
৪। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
৫। অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদকারী যার জাতীয পরিচয়পত্র /(NID) নেই তার পিতা অথরা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
৬। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মসনদ (BRC English Version) নিম্নোক্ত বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে।
ক। ১৮ বছরের নিম্নে হলে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version)
খ। ১৮ থেকে ২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version)
গ। ২০ বছরের উর্ধ্বে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) আবশ্যক।
ঘ। তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) গ্রহণযোগ্য হবে।
৭। তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়
৮। দত্তক/অভিভাবক তথ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টে আরেবনের সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে।
৯। আবেদনের বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস/বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।
১০। ১৮ বছরের নিম্নে অথবা ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছর ও পাসপোর্ট বহি ৪৮ পৃষ্ঠার।
১১। প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদ সমূহ (যেমন: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড/সংযোগ করতে হবে।
১২। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও (GO)/এনওসি (NOC)/ প্রত্যয়নপত্র/অবসরত্তোর ছুটির আদেশ(পিআরএল অর্ডার PRL Order)/পেনশন বহি আপলোড//সংযোজন করতে হবে। যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ ওয়েবসাইটে আপলোড থাকতে হবে।
১৩। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহের সনদ/নিকাহ নামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
১৪। দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট (VAT) সহ অন্যান্য চার্জ যদি থাকে। অতিরিক্ত হিসেবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রে ও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।
১৫। কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং (Consular & Welfare Wing) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর দাখিল করতে হবে।
১৬। বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
১৭। অতি জরুরী পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে নতুন ইস্যু নিজ উদ্দেগ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ পূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের ক্ষেত্রে দাখিল করতে হবে।
১৮।ক। দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে দুই কর্ম দিবসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
খ। দেশের অভ্যন্তরে জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে সকল শর্তাদি সঠিক থাকা সাপেক্ষে সাত কর্মদিবসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
গ। দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্যাদি সঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
১৯। আবেদনের সময় মূল জাতীয়পত্র(NID) অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ সরকারী আদেশ/অনাপত্তি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।
২০। পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।
২১। হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।
২২। ৬ বছরের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে 3R Size এরুপ সাইজের ল্যাবপ্রিণ্ট গ্রে ব্যাক গ্রাউন্ড ছবি দাখিল করতে হবে।
২৩। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে। পূণরায় পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সময় পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি এবং জিডি কপিসহ আবেদন করতে হবে।
তথ্য সূত্র: বহিরাগমন শাখা - ১, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বারক নং:ওয়েব ৫৮.০০.০০০০.০৪০.০১.০০৩.১৬-১২৩৩৪।
ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন ফরম পূরণ লিংক: https://www.epassport.gov.bd/onboarding
ফি জমা দেয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ, পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ, পাসপোর্ট ফরম ও এর সংযুক্তি সত্যায়িত করা, আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া, পুলিশ ভেরিফিকেশন, পাসপোর্ট সংগ্রহ,
ই পাসপোর্ট নতুন আবেদনের সাথে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে
যেমন: ছবি, বাংলায় নাম, পিতার নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পিতার নাম বাংলায় ও ইংরেজীতে, মৃত হলে সনদ, লিঙ্গ, রক্তের গ্রুুপ, জন্মনিবন্ধন নম্বর, জন্মস্থান, ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, । ভাড়াটিয়া হলে বাড়িওয়ালার NID. বিদ্যু’ বিল, বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়া কর্তৃক ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র, প্রবাসী হলে ভিসার সিল ও তারিখসহ পাসপোর্টর কপি। নিবন্ধন ফরমের ৩৪ ও ৩৫ নম্বর সনাক্তকারী হিসেবে বাবা, মা। নিবন্ধন ফরমের যাচাইকারী হিসেবে পাসওয়ার্ড স্বাক্ষর করতে হবে। সকল সনদের সফট কপি ও হার্ড কপি প্রমাণ হিসেবে জমা দিতে হবে।
১। জরুরী পাসপোর্ট
জরুরি পাসপোর্ট সাধারণত সাত কর্ম দিবসের মধ্যে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। যদি আপনার সকল কাগজপত্রাদি সঠিক থাকে, তাহলে আপনি দুই থেকে সাতদিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে পারেন । আবার পাসপোর্টের ধরণ ১০ বছর এবং ০৫ বছর রয়েছে। যদি আপনি ০৫ বছরে ৪৮ পাতার জরুরী পাসপোর্ট নিতে চান তাহলে ব্যাংক রশিদ ৬,৩২৫ টাকা জমা দিতে হবে (সোনালী ব্যাংক)। আর যদি ১০ বছর মেয়াদ সংবলিত পাসপোর্ট নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ৮,০৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
আর যদি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী জরুরী পাসপোর্টটি নিতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকে ১০,৩৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
২। অতি জরুরী পাসপোর্ট
অতি জরুরী পাসপোর্ট সাধারণত দুই কর্ম দিবসের মধ্যে দিয়ে থাকেন। যদি আপনার কাগজপত্রাদি সঠিক থাকে তাহলে এ মেয়াদেই আপনার পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন। যাবতীয় কার্যকলাপ নিয়মানুসারে চলতে থাকবে আপনার পাসপোর্ট পাওয়ার পর ও। অতি জরুরী পাসপোর্ট পেতে ০৫ বছরের জন্য ব্যাংক রশিদ জমা দিতে হবে ৮,৬২৫ টাকা। ১০ বছরের জন্য ১০,৩৫০ টাকা।
আর যদি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী অতি জরুরী পাসপোর্টটি নিতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকে ১৩,৮০০ টাকা জমা দিতে হবে।
৩। সাধারণ পাসপোর্ট
সাধারণ পাসপোর্ট সাধারণত ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। যদি আপনার সকল কাগজপত্রাদি সঠিক থাকে, তাহলে আপনি দুই থেকে সাতদিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে পারেন । আবার পাসপোর্টের ধরণ ১০ বছর এবং ০৫ বছর রয়েছে। যদি আপনি ০৫ বছরে ৪৮ পাতার জরুরী পাসপোর্ট নিতে চান তাহলে ব্যাংক রশিদ ৪,০২৫ টাকা জমা দিতে হবে (সোনালী ব্যাংক)। আর যদি ১০ বছর মেয়াদ সংবলিত পাসপোর্ট নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ৫,৭৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
আর যদি ৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদী জরুরী পাসপোর্টটি নিতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকে ৮,০৫০ টাকা জমা দিতে হবে।
পাসপোর্টের প্রকারভেদ:
পাসপোর্ট সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে, যথা:হাতের লেখা পাসপোর্ট, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, ই-পাসপোর্ট।
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট:
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি হলো এমন একটি পাসপোর্ট যা একটি নির্দিষ্ট যন্ত্র বা মেশিন দ্বার সনাক্ত করা যায়। এই পাসপোর্টের তথ্য এমনভাবে থাকে যে মেশিন সনাক্ত করতে পারে। বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সাল থেকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া শুরু করেছেন।
পাসপোর্ট এর বিধিমালা
পাসপোর্ট এর বিধিমালা আদেশ ১৯৭৩ পাসপোর্ট এর বিধিমালা১৯৭৪ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।