গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
সরকারি রুলস ।
অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা (Grievance Redress System Guidelines) সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৫ পরিমার্জিত ২০১৮
পটভূমি/ভূমিকা
ক। সাধারণ জনগণ যেভাবে অনলাইনে অভিযোগ করে সমাধান পাবেন বিস্তারিত দেখুন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সরকারি রুলস ।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধান ২১ -২ অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে যে, সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। সেবার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন জনসেবা প্রদানকারী দপ্তরসমূহের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা। (Grievance Redress System Guidelines) এত দ্রুত বিচার ব্যবস্থা একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং যেকোনো প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা ও কার্যকারিতা পরিমাপের অন্যতম সূচক হিসেবে একটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত জনগণের নিকট সরকারি দপ্তরসমূহের জবাবদিহি নিশ্চিতকরন সেবার মানোন্নয়ন এবং সুশাসন সংহত করার মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা নিশ্চিত করাই অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা মুখ্য উদ্দেশ্য।
(Grievance Redress System Guidelines)অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনলাইনে আবেদনের লিংক
খ। জনসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহের প্রতিশ্রুত সেবা, সেবা প্রদানের পদ্ধতি এবং সেবা ও পণ্যের মান সম্পর্কে নাগরিকের অসন্তুষ্টি সংক্ষুব্ধতা থেকে অভিযোগ উৎপত্তি হতে পারে। এ ক্ষোভ যুক্তিসংগত বা বাস্তবায়ন হোক বা না হোক প্রতিকার চাওয়া বা বক্তব্য প্রদানের একটি কার্যকর ক্ষেত্র বা প্লাটফর্ম থাকলে তাদের অসন্তোষ বাক্য প্রমোশনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ লক্ষ্যে একটি আধুনিক অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা থাকা অবশ্যক।
গ। সচিবালয় নির্দেশমালা ২০১৪ এর অষ্টম অধ্যায়ঃ ২৬২/১ ও ২ সংখ্যক নির্দেশে নাগরিকগণের মতামত গ্রহণ এবং স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে অভিযুক্ত সমূহের অধিকার প্রদান এবং সংরক্ষণের কার্যকর পদক্ষেপ পদ্ধতি অনুসরণের অনুশাসন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অভিযোগ প্রতিকারের জন্য বর্তমান বিভিন্ন দপ্তরে সীমিত পরিসরে স্বতন্ত্র ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অধিকন্তু ই-ফাইলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এবং কোন কোন মন্ত্রনালয় বিভাগের অনলাইন অভিযোগ দাখিল বা প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ঘ। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সঙ্গে সেবা প্রদানের সরকারি কর্মকর্তাগনকে অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে জনসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ইতিমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ২০০০ এর প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয়ভাবে অভিযোগ গ্রহণ ও প্রতিকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল। সুপারিশের আলোকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিবালয় ৫ নম্বর গেটে কেন্দ্রীয়ভাবে জনসাধারণের অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্র চালু করে প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ অধিকারের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে ২০০৭ সালে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। যার আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মন্ত্রণালয় বিভাগসমূহ অনিক কর্মকর্তার নিকট অভিযোগসমূহ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ সুস্থভাবে ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বিভাগ কর্তৃক ২০১৫ সাল হতে অনলাইনে অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
১.২। অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য সমূহ
ক। অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি সেবার মান বৃদ্ধি, কম সময়ে স্বল্প ব্যয়ে ও ভোগান্তি ছাড়া সেবা প্রদান এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বপ্রণোদিতভাবে সেবা প্রদানে এগিয়ে আসার মনোবৃত্তির বিকাশ। একটি আদর্শ অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য হতে পারে কোন একটি নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভাগ অফিস অঞ্চলে সাধারণত কি কি ধরনের অভিযোগ দাখিল হয় সে সম্পর্কে বিশ্লেষণমূলক তথ্যাদি সংগ্রহ এবং অভিযোগের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে বিষয়ে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ। এ উদ্দেশ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হতে প্রাপ্ত অভিযোগ ও বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সরকারি সেবা প্রদান পদ্ধতি ধারাবাহিক মনোনয়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
খ। অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা কে প্রতিটি সরকারি দপ্তরের প্রশাসনিক দায়িত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গণ্য করা বাঞ্চণীয়। সেবা প্রত্যাশিদের নিকট থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে এবং প্রাপ্ত অভিযোগের আলোকে নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে কার্যক্রম গ্রহণ ও প্রতিকার করে তাদেরকে অবহতি করতে হবে। তবে প্রতিটি অভিযোগ নিরবিচ্ছিন্ন প্রতিকারের তুলনায় অভিযোগের কারণ ও প্রকৃতি অনুসন্ধান প্রবক্তা স্থানীয়ভাবে নিরসন এবং সেবা প্রদান ব্যবস্থায় স্থায়ী সংস্কার সাধনের মাধ্যমে সেবা প্রত্যাশী গণকর্মচারীদের অসন্তোষ দূর করার প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করা হবে।
১.৩। নির্দেশিকা প্রণয়নে অনুসূত্র পদ্ধতি
সেবা সংক্রান্ত অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থায় অধিকতর শৃঙ্খলা বিধান ও এ সংক্রান্ত কতিপয় অস্পষ্টতা দূরীকরণ এবং অনলাইন অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুগম করার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক এবং সেমিনার ও ওয়াকসপ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে এ নীতি অনুসরণের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ দপ্তর সংস্থা ও মাঠ প্রশাসনের দপ্তরসমূহ ভর্তি কার্যক্রম গ্রহণের সময় কিছুটা অস্পষ্টতা পরিলক্ষিত হওয়ায় তা নিরসনে প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এছাড়া নতুনভাবে প্রণীত দ্বিতীয় ভার্সনে জিআরএস সফটওয়ারের সাহায্যে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ করার নিমিত্তে এ নির্দেশনা মৃত্তিকা সংশোধন করা প্রয়োজন। সকল মন্ত্রণালয় বিভাগসমূহ অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তাগণের মতামতের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৫ পরিমার্জিত ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়।
১.৪। ওয়েবভিত্তিক অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা
সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও দায়িত্বশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা যায়। বিপুল সংখ্যক অভিযোগের তথ্য সংরক্ষণ এবং অসন্তোষ আহত নিহিত কারণ অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের জন্য অফলাইন পদ্ধতি যথেষ্ট নয় দক্ষতার সঙ্গে সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সংক্রিয় অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা। প্রতিবেশী ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়শিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনলাইনে অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এ সকল দেশের ন্যায় বাংলাদেশ অনলাইন জিআরএস প্রবর্তনের জন্য একটি ওয়েব ভিত্তিক সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। যা সেবা প্রত্যাশীদের অভিযোগ প্রতিকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক ২০১৫ সালের বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পরিমার্জিত জিআরএস এর ওয়েবসাইট জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এ ওয়েবসাইট কেন্দ্রীয় অর্থাৎ মন্ত্রণালয় বিভাগ পর্যায়ের অভিযোগ গ্রহণ ও তার প্রতিকার এর সুযোগ সৃষ্টি হয় কিন্তু উক্ত পদ্ধতিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতাধীন দপ্তর সংস্থা আঞ্চলিক বিভাগীয় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সমূহের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তার নিকট দাখিল সুযোগ ছিল না। তাছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বর্তমান প্রচারিত অনলাইন সিস্টেম এর পাশাপাশি আরো অন্য মন্ত্রণালয় বিভাগ সংস্থার বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনলাইন চালু রয়েছে কিন্তু নতুনভাবে প্রবর্তিত জিআরএস সফটওয়্যার এর দ্বিতীয় ভার্ষনটি সমন্বিত comprehensive একত্রিত integrated এবং ব্যবহারকারী বান্ধব একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অভিযোগ নিস্পত্তিতে ভূমিকা পালন করবে। সে কারণে দ্বিতীয় ভার্সনে জিআরএস সফটওয়্যার এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ করার নিমিত্তে নির্দেশিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সংজ্ঞা সরকারি দপ্তর কোন আইন বিধি বা সরকারি আদেশ বলে প্রতিষ্ঠান সংবিধিবদ্ধ সংস্থা অথবা সরকারের মালিকানা নিয়ন্ত্রণাধীন কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি বা সিটিজেনচার্টার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর কর্তৃক সেবা প্রত্যাশী জন্য সেবা প্রদান সম্পর্কিত লিখিত প্রতিশ্রুতি হলো সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি বা সিটিজেন চার্টার।
অভিযোগ সরকারি দপ্তর অথবা অনলাইনের আওতায় নিবন্ধিত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাবা পণ্য এবং অথবা সেবা পদ্ধতি সম্পর্কে সভাপতিদের অসন্তুষ্টি অথবা প্রদত্ত সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি বহির্ভূত কাজ অথবা প্রত্যাশীদের বৈধ অধিকার প্রদানের অস্বীকৃতি বিষয়ে ইলেকট্রনিক বা প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত ফরমে দায়েরকৃত দরখাস্ত অভিযোগ হিসেবে বিবেচিত হইবে।
অধিক ক্ষেত্র
অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুচ্ছেদ ২ এর ক তে উল্লেখিত সরকারি দপ্তরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে আইনের আওতায় নিবন্ধিত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি দপ্তর অভিযোগ প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অভিযোগের প্রকৃতি নাগরিক অভিযোগ
নাগরিক অভিযোগ (Grievance Redress System Guidelines) সরকারি দপ্তরের প্রতিশ্রুতি ভাবাপন্ন এবং অথবা সেবা প্রদান পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো নাগরিকের অসন্তুষ্টি অথবা প্রদত্ত সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধিবহির্ভূত কাজ অথবা নাগরিকের অধিকার প্রদানের অস্বীকৃতির বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদন নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হইবে।