মেহেরপুর Meherpur
জেলা পরিচিতি District Introduce
জেলার পটভূমি History of Meherpur
ইতিহাসের স্বর্ণপাতা থেকে অনেক অনেক পূর্বে হারিয়ে গেছে মেহেরপুর এর নামকরণ সম্পর্কিত তথ্য সমূহ,
অনুমান অনুধাবন অথবা বিশ্লেষণ এই নিয়েই এ বিষয়ে আত্মতৃপ্তি ছাড়া নেই, দীর্ঘকাল ধরেই এ বিষয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছে তবুও বিষয়টি জটিলতা রয়ে গেছে ।
মেহেরপুর নামকরণ সম্পর্কে এ পর্যন্ত দুটি আনুমানিক তথ্য পাওয়া গেছে, একটি হচ্ছে ইসলাম প্রচারক দরবেশ মেহের আলী নামের এক ব্যক্তির নামের সাথে সাহায্য সম্পূর্ণ রেখে ষোড়শ শতকের অথবা তার কিছু কাল ধরে মেহেরপুর নামকরণের সৃষ্টি হয়েছে, দ্বিতীয় ও তার পুত্রবধু এই শহরে বাস করতেন বলে প্রচারিত, মিহিরের নাম মেহেরপুর পরবর্তী অপ মেহেরপুর নামের উৎপত্তি হয়েছে
খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে স্বনামধন্য খ্যাতিমান ভৌগোলিক মানচিত্র গঙ্গা নদীর অববাহিকার বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র দ্বীপ পরিলক্ষিত হয়, এই ক্ষুদ্র জীব অঞ্চলকে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অঞ্চল বলে মনে করা হয়, গঙ্গা অথবা বৃহত্তম কোন স্থানে তিল তিল করে জেগে ওঠায় পূর্বাঞ্চলের দক্ষিণবঙ্গ থেকে পণ্ঠাপথ জাতীয় অথবা পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে বিভিন্ন ধর্মের বর্ণের জাতির কিছু কিছু লোক চাষাবাদ অথবা প্রচুর মাছ সংগ্রহের আশায় এই অঞ্চলে আগমন করে বসতি স্থাপন করেছিল বলে অনুমান করা যায়।
দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত এবং চতুর্থ শতাব্দীর প্রথমার্ধে পূর্ববাংলা সমতল ও পশ্চিমবাংলায় পুরুষ কারণ রাজ্য অথবা পঞ্চম শতাব্দীতে গুপ্ত শাসন আমলে এ অঞ্চলের কোন উল্লেখযোগ্য ইতিহাস সম্পর্কে শত চেষ্টা করেও কিছুই জানা যায়নি, বাংলাদেশের হরিকেল, সমতট ও গৌড় এই তিন রাজ্যের শাসন আমলের মেহের পুর অঞ্চল কোন সময়ে সমতট আবার কখনো গৌড়ের শাসনাধীন ছিল, তবে এই তিনটি রাজ্য সঠিক পরিধি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক একমত হতে পারেনি বলে জানা যায়, খ্রিস্টীয় শতাব্দি পর্যন্ত মেহেরপুর কোন রাজার প্রকৃত শাসনাধীনে ছিল না তা সঠিকভাবে জানা যায় না, ৬০৬ সালে রাজা শশাঙ্কের রাজত্বকাল চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাং বাংলাদেশ ভ্রমণ করে এবং যে বিবরণ দিয়ে গেছেন তা থেকে বিশেষভাবে অবহিত হওয়া যায় যে তৎকালীন বঙ্গদেশ কামরুল ,পুষ্প বর্ধন, কর্ণসুবর্ণ, সমতট, ও তাম্রলিপি এই পাঁচ ভাগে বিভক্ত ছিল, মেহের পুর অঞ্চল সপ্তম শতাব্দীতে রাজা শশাঙ্ক রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে অনুমান করা হয়।
এছাড়া অনুমান করার যথেষ্ট যুক্তি আছে যে, শশাঙ্ক রাজ্যের রাজধানীর ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত মেহেরপুর জনপদ তার প্রত্যেক শাসনাধীন ছিল, শশাঙ্কের মৃত্যুর পর গৌড় রাজ্য অভ্যন্তরীণ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পর সমস্ত ৬৪২ সালের দিকে মেহেরপুর কামরুজ্জামান রাজ্য অন্তর্ভুক্তিতে, শশাঙ্কের মৃত্যুর প্রায় ১০০ বছর যাবৎ বাংলায়। চরম অরাজগতা বিদ্যমান ছিল, সেই সময় কোন রাজা ধীরাজ কোন অঞ্চলে তাদের শাসনভার বজায় রেখেছিলেন তা আজও পুরোপুরি জানা যায়নি, অষ্টম শতাব্দীর পঞ্চদশের বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল বংশের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা সভায় অনুমান করা হয় মেহেরপুর পাল রাজত্বের শাসনাধীন ছিল এবং পাল রাজত্বের অবসান কাল অর্থাৎ দশম শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত অঞ্চল রাজ্যভুক্ত ছিল
- খুলনা বিভাগের ইতিহাস History Of Khulna Division
- মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের নাম Renowned people of Meherpur district
- মেহেরপুর জেলার নামকরণের ইতিহাস Naming History of Meherpur district
- মেহেরপুর জেলার গ্রামের সংখ্যা Village of Meherpur district
- মেহেরপুর জেলার জনসংখ্যা Population of Meherpur district
- মেহেরপুর জেলার উপজেলা Upazila of Meherpur district
- মেহেরপুর জেলার মানচিত্র Map of Meherpur district
- মেহেরপুর জেলার সদর থানার মানচিত্র Map of Sadar Thana in Meherpur
- মেহেরপুর জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান Institution of Meherpur
- মেহেরপুর জেলার পৌরসভা কয়টি Pouroshova of Meherpur district
লক্ষণ সেন এর রাজত্বকালে ১২০৩ মতান্তরে ১২০৪ বিহার থেকে ঝাড়খন্ডে পথে একটি আর উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী নামক এক তুর্কি মুসলিম অসীম সাহসী সেনাপতি মাত্র ১৮ অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে লক্ষণ সেনের রাজধানী নদিয়া দখল করেছিলেন, বক্তিয়ার পিছনে যে বিরাট সেনাবাহিনী ছিল তাদের মধ্যে মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী তার সঙ্গে দ্রুত আসতে সক্ষম হয়, অবশ্য বক্তিয়ার নদীয়া দখলের ৪০ বছর পর মিনহাজ সিরাজ রচিত তাবাকাত-ই-নাসিরী গ্রন্থে উল্লেখ করা করা আছে যে মাত্র ১৮ জন অশ্বারোহী সৈন্য নদিয়া নগরীতে প্রবেশ করলে তাদেরকে তুর্কি বিক্রেতা মনে করে কেউ বাধা দান করেন নি, প্রকৃতপক্ষে সেইসময় লক্ষণ সেন বার্ধক্যজনিত কারণে রাজকার্যে অবহেলা, ও রাজনীতির নানা ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতিতে সমস্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল করে করে ফেলে, যার দরুন তুর্কি আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ও সাহস লক্ষণ সেনের ছিল না।
উপস্থিত হয়ে আক্রমণ করেন, যেসময় রায় সকল কার্যাদি সমাপনের খাদ্য ভক্ষণ এর বসে ছিলেন, সকল কার্যাদি সম্পন্ন বসেছিলেন তিনি যখন মুসলমান আক্রমণের সংবাদ পেয়ে পুত্র, মহিলা, সম্পদ, দাস দাসী ও অন্যান্য সকল কিছু পরিত্যাগ করে অন্তপুরের দুয়ার দিয়ে নৌকা পথে পলায়ন করেন, বখতিয়ার খিলজির নদীয়ার দখল করে দৌড়ে গমন করেছিলেন, বক্তিয়ার নদিয়া বিজয় অঞ্চলে মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তনের হিসেবে ধরল সেই সময় মুসলিম শাসন কোন স্থায়ী অর্জন করতে সক্ষম হয়নি, তার নদীয়া বিজয়ের প্রায় ৫০ বছর পর মুরগির উদ্দিন পুনরায় নদিয়া দখল করেন, নদীয়ার বাংলার প্রথম মুসলমান শাসনের সূত্রপাত হয় তাহা প্রায় ছয় বছর দীর্ঘ ছিল।
মেহেরপুর জেলার মানচিত্র
একাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে শেষ স্বাধীন নবাব হিন্দু রাজা লক্ষণ সেনের রাজত্বের পতনের পর তার রাজধানী নদীয়াতে যে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন তারই ক্রমবিকাশ ঘটে সমগ্র বাংলায় মুসলিম শাসনের ইতিহাস ১২০৩ অথবা ১২০৪ সাল থেকে ১৭৬৫ সালের ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ানি লাভ পর্যন্ত ৫৬১ বৎসরের মধ্যে মোট ৭৬ সুবাদার নাজির, রাজা ও নবাব বাংলা শাসন করে গেছেন, তাদের সকলের শাসনের সময় মেহেরপুর অন্তর্গত, এই শাসকদের ১১ জন সুবেদার ঘড়ি খিলজী মুসলিম সুলতানদের মনোনীত ছিল, ২৬ জন স্বাধীন শাসনকর্তা অবশ্য এদের মধ্যে শেরশাহের শাসন গল্প ছিলেন, অবশিষ্ট ৩৪ জন মোগল সম্রাটদের পছন্দমত, পাঁচজন স্বাধীন রাজা রাজা গণেশ, জামাল উদ্দিন শামসুদ্দিন আহমেদ শাহ রয়েছেন এবং রাজা মানসিংহ বাদে প্রায় সকলেই আফগান তুর্কি ইরানীয় মোঘল বংশের ছিলেন, গৌড়ের রাজা গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের সময় ১৩৮৯ থেকে ১৪০৯ ফাল্গুনের সকল প্রকার রাজত্ব ও শাসন ব্যবস্থার কর্মকর্তা বাদুড়িয়া পরগনার জমিদার রাজা গণেশ গৌড়ের স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, গণেশের পরলোক গমনের পর তাহার পুত্র যদু যিনি মুসলিম নাম ধারণ করে মোঃ জালাল উদ্দিন ঘরের সিংহাসন পরিচালনা করতে থাকেন, তার মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সুলতান সালাহউদ্দিন আহমেদসহ উত্তরাধিকারসূত্রে রাজ্য পরিচালনার দায়িত্বভার মূলত এই সময় থেকেই এ অঞ্চলে ইসলাম ধর্মের প্রচার কার্যক্রম ব্যাপক হারে শুরু হয়, শামসুদ্দিন আহমেদ নির্মমভাবে হত্যা করে একটি অংশে নাসিরুদ্দিন আহ্মেদ সাগর সিংহাসন দখল করেন, সুলতানি আমলের একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধশালি অঞ্চল ছিল বলে জানা যায়, ১৪ শতাব্দীতে মেহেরপুরের ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য বেশকিছু আউলিয়া দরবেশ এখানে আগমন করেন।
মোগল সম্রাট আকবরের শাসন আমলে মেহেরপুর বানের ভয়ানক মজুমদার তার ভালো নাম দুর্গাদাস সমাদ্দার এক বিশাল রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, নদীয়ার রাজবংশ নামে প্রতিষ্ঠিত, নদী রাজবংশী অঞ্চল জমি কায়েম কর রাজ্য পরিচিত, এইসময় নদীয়ার রাজ্য জমিদারি এলেগা ছিল ৩১৫১ বর্গমাইল, নদিয়া রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ভোলানন্দ মজুমদার হুগলি শাসনকর্তা ইসলাম সাহেবের তিনি পদ লাভ করে সক্ষম হন, পরবর্তী সময়ে প্রদত্ত সাথে যুদ্ধের মির্জা নাথান ও রাজা মানসিংহ কে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি বাদশা জাহাঙ্গীরের নিকট হতে ভবানন্দ মজুমদারের উপাধি ও জাগিও লাভ করতে সক্ষম হন, তার জমিদারি রাজ্য ছিল, মহতপুর, মারুফ দা, সুলতান, কাশিমপুর, নদিয়া নিয়ে মোট ১৪টি পরগনা দুর্গাদাস সংবাদদাতার পিচ্চি জমিদারি তার ভাই জগদিশ কে বাড়ি প্রদান করেন, তিনি নিজের দায়িত্বে রাখেন ভল্লবপুর পরগনা ভবানন্দ মজুমদারের রাজ বংশের রাজা রায় মাটিয়ার থেকে কৃষ্ণের উপসক নিয়ে বলে জানা যায় আর সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ রাজার পুত্র মহারাজা রুদ্র এই স্থানটির নাম রাখেন কৃষ্ণনগর, পরবর্তীতে এই কৃষ্ণনগর নদীয়া জেলার রাজধানীতে রূপ লাভ করে।
১৭৮২ সালে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নদীয়ার সিংহল, এই নদীয়ার অন্যতম অঞ্চল ছিল মেহেরপুর এবং রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শাসনাধীন মেহেরপুর নদিয়া ছিল শাসিত হয়েছে রাজ্য কৃষ্ণচন্দ্র যথাযথ সময়ে নদীয়ার পরিচালিত খাজনা পরিশোধ করতে না পারায় নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ তাকে গ্রেফতার করেন, ১৭৫০ সালের ইতিহাস থেকে জানা যায় মেহেরপুর শহর শতাব্দীতে স্থাপিত হলো তৎকালীন সময়ে সেখানে জনবসতি গড়ে ওঠেনি কেন না ১৭৫০ সালে মুঘল শাসনের অধীনে নবাবদের শাসনাধীন ছিল ১৭৫০ সালে বাংলা সুবিধার আলীবর্দী খাঁ মেহেরপুর গ্রামে নদী পথে আসতে স্বীকার করতেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ফলে তিনি পরিষদসহ রাজু নামে এক অখ্যাত বিধবা রমণীর আতিথ্য গ্রহণ করতে বাধ্য হন, নবাব আলীবর্দী খাঁ একটি আর মুগ্ধ হয়ে ভৈরব নদীর পূর্ব তীত সমগ্র বাগোয়ান মৌজা উক্ত মহিলাকে দান করেন কথিত আছে, রাজশাহী মহিলা বহু পুরুষ আর এই কারণে গোরা আচরণের জন্যই গাড়োয়ানের সমগ্র এলাকার তথা মেহেরপুর প্রদান করেন তাহলে দেখা যায় সপ্তদশ শতকে মেহেরপুর গোচারণভূমি ছিল সেখানে তেমন জনপদ গড়ে ওঠেনি।
ভৌগলিক পরিচিতি, অবস্থান
আয়তন ৭১৬.০৮ বর্গ কিলোমিটার, এটিই বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে সীমান্তবর্তী জেলা, উত্তর উত্তরের কুষ্টিয়া জেলা ও পশ্চিম পশ্চিমবঙ্গ ভারত দক্ষিণের চুয়াডাঙ্গা ও পশ্চিমবঙ্গে ভারত পূর্বে চুয়াডাঙ্গা কুষ্টিয়া জেলা পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ ভারত।
ভূপ্রকৃতি
মেহেরপুর জেলার মৃতপ্রায় বদ্বীপ সমভূমি, খুব অল্প পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয়, বর্ষা ঋতুতে প্লাবিত হওয়ার মতো পানি প্রবাহিত, হয় ফলে নতুন সুযোগ নেই এখানে, তবে নদীগুলির গতিপথ মেহেরপুর তুই ওদের সৃষ্টি হয়েছে।
- মেহেরপুর সদর-২৬১.৪২
- গাংনী- ৩৪২.৯৮
- মুজিবনগর-১১২.৬৮
আয়তন শতকরা হার
- মেহেরপুর সদর- ৩৬.৫১
- গাংনী-৪৭.৭৬
- মুজিবনগর-১৫.৭৩
- জনসংখ্যা-৬,৫৫,৩৯২
- পুরুষ- ৩,২৪, ৬৩৪
- মহিলা-৩,৩০,৭৫৮
- বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার-১.০২