প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজের তালিকা List of cadet Colleges of Bangladesh under Ministry of Defense
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত বিশেষ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
A special educational institution run by the Bangladesh Army
কলেজ সমূহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান
Colleges are Institutions under the Ministry of Defence
বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজ সামরিক বাহিনী বিশেষ ধরনের। এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধারণা সৃষ্টি হয় সামরিক বাহিনীতে যোগ কর্মকর্তা তৈরীর চেতনা থেকে। বিসমার্ক প্রথম জার্মানিতে ক্যাডেট কলেজ ধারণার প্রবর্তন করেন, পরবর্তীকালে নেপোলিয়ন ফ্রান্সের এই ব্যবস্থা চালু করেন এবং সর্বশেষে পাকিস্তান ও তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে এই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ইংল্যান্ডের উন্নত মানের পাবলিক স্কুল এর সাথে এর আদর্শগত সাবজেক্ট রয়েছে, ক্যাডেট কলেজ মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক সম্মিলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্তমানে মূলত পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে, এই দুটি দেশেই ঠিক ক্যাডেট কলেজ নামীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে, ক্যাডেট কলেজ বলতে বিশেষ ধরনের সামরিক স্কুল প্রতিষ্ঠানকে ক্যাডেট কলেজ বলা যাবে না কেবল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এই নামটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ক্যাডেট কলেজসমূহ - প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন
ক্যাডেট কলেজ এর প্রতিষ্ঠাকাল - ১৯৫৮ সালে
মোট ক্যাডেট কলেজ এর সংখ্যা - ১২ টি
প্রথম ক্যাডেট কলেজের নাম - ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ
মেয়েদের ক্যাডেট কলেজের সংখ্যা কতটি - ৩ টি
ছেলেদের ক্যাডেট কলেজের সংখ্যা কতটি - ৯ টি
ক্যাডেট কলেজসমূহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন - সাহিত্য শাসিত আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ইতিহাস
জার্মানিতে প্রথম ক্যাডেট কলেজ ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। সামরিক বাহিনীর যোগ্য কর্মকর্তা তৈরিতে অল্প বয়স থেকেই প্রশিক্ষণ শুরু করার বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকে। এই ধারণা তৎকালীন ক্যাডেট কলেজ পদ্ধতিতে শক্তি ছিল। নেপোলিয়ানের যুগে ফ্রান্সের সামরিক দক্ষতা বৃদ্ধির একটি অন্যতম উপাদান হিসেবে ক্যাডেট কলেজ পদ্ধতি গৃহিত হয়।
তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম জেলার ফৌজদারহাটের হাজার 1958 সালে প্রথমে কলেজের নাম রাখা হয় ইস্ট পাকিস্তান ক্যাডেট কলেজ পরবর্তীকালে কলেজের নাম হয় ফজদারহাট ক্যাডেট কলেজ 185 একর জায়গার ওপর একটি প্রতিষ্ঠিত এবং সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীনে ছিল। এর সকল অর্থের যোগান দিতে রাষ্ট্র। কলেজ পরিচালনার দায়িত্বভার ছিল চতুর্দশ ডিভিশনের জিওসি জেনারেল অফিসার কমান্ডিং এর হাতে, সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থ যোগানের দায়িত্ব ছিল, মূলত আয়াত খানের উদ্যোগেই এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। নিউজিল্যান্ড সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইংল্যান্ড বসবাস করছিলেন এবং সেখানকার পাবলিক স্কুলে কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার নাম স্যার উইলিয়াম মরিস ব্রাউন, যার সাথে সাক্ষাৎ করে তার পূর্ব পাকিস্তানের ক্যাডেট কলেজ পরিচালনার ভার গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান, এতে রাজি হয়ে ব্রাউন পূর্বপাকিস্তানে আসেন এবং ফজদারহাট ক্যাডেট কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি এই কলেজের দীর্ঘ সাত বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।
পড়াশোনার উচ্চ মান পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য ক্যাডেট কলেজের দ্রুত সুনাম অর্জন করে। এতে উৎসাহিত হয়ে পাকিস্তান সরকার আরো ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। পাকিস্তান আরও কয়েকটি ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় তন্মধ্যে পূর্বপাকিস্তানে গঠিত হয় আরো তিনটি ক্যাডেট কলেজ, হাজার 1964 সালে খুলনা বিভাগে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ ।1965 সালে ময়মনসিংহ জেলার মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ, এবং প্রতি বছর তথা হাজার 966 সালে রাজশাহী জেলা রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন বৃহত্তম ময়মনসিং জেলা বিভক্ত হয়ে কয়েকটি জেলা গঠন করা হয় তখন মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজের নাম পরিবর্তন করে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ। নবগঠিত টাঙ্গাইল জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়।
1960 সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের উদ্যোগে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল নামে একটি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয় এটি প্রতিষ্ঠিত অনেকাংশে ক্যাডেট কলেজের অনুকরণ করা হয়েছিল, এই ধারাবাহিকতা 1970 সালে কুমিল্লা সিলেট বরিশাল পাবনা ও রংপুর জেলায় রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এগুলোর মধ্যে ময়মনসিং রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল মেয়েদের জন্য সংযুক্ত করা হয়, রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল একই ধারায় আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও এদের কিছু মৌলিক বিদ্যমান, ক্যাডেট কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব থাকে সরাসরি সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে, কিন্তু দেশের অন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপর।
1971 সালের যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, স্বাধীনতার পর ক্যাডেট কলেজ গুলো পরিচালনার দায়িত্ব কার ওপর অর্পন করা হবে, এ নিয়ে, অবশেষে 1972 সালের আগস্ট মাসে রাষ্ট্রপতি ক্যাডেট কলেজ 89 অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রণয়ন করা হয়। এ অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট সাপেক্ষে ক্যাডেট কলেজ পরিচালনার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ক্যাডেট কলেজ কাউন্সিলর গঠিত হয়। এর মধ্যে ক্যাডেট কলেজ গভর্নিং বডি কে পুনঃবিন্যাস করা হয়, এই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হন শিক্ষা মন্ত্রী এবং কাউন্সিল এর অধীনে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান বিভাগীয় কমিশনার।
1973 সালে জাতীয় সংসদে ক্যাডেট কলেজ আইন পাশ করা হয়। এর মাধ্যমে ক্যাডেট কলেজ কাউন্সিলরকে সরাসরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য নেয়া না হয়। পুনঃবিন্যাস করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব কে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান করা হয় সামরিক বাহিনীর প্রধান যখন থেকে অনেক বার কাউন্সিল ও গভর্ণিং বডির চেয়ারম্যান পদে রদবদল হয়েছে, কিন্তু এর মৌলিক বৈশিষ্ট্য সমূহ একই রয়ে গেছে।
1978 সাল থেকে পূর্বে প্রতিষ্ঠার মডেল স্কুল গুলোতে ক্যাডেট কলেজে রূপান্তরিত প্রক্রিয়া শুরু হয়, প্রথমে উক্ত বছরেই সিলেট ও রংপুরে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল দুটিকে ক্যাডেট কলেজে রূপান্তরিত করা হয়। 1981 সালে বরিশালের ও পাবনা ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, 1982 সালে ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে রূপান্তরিত করা হয়। 1983 সালে কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল ও রূপান্তরিত হয় এভাবে বাংলাদেশের সর্বমোট ক্যাডেট কলেজের সংখ্যা দাঁড়ায় 10 টি তে। বাংলাদেশ ক্যাডেট কলেজের সংখ্যা ছিল 10 টি 2006 সালের সরকারের বিশেষ উদ্যোগে আরও দুটি ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজ দুটি মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে, এর ফেনী 9টি ছেলেদের মেয়েদের জন্য তিনটি সংরক্ষিত ক্যাডেট কলেজউ